গাছেরবয়স : নারিকেল গাছের বয়স পাঁচ-ছয়
বছর হলেই তাতে ফল ধরে। তবেছোট অবস্থাতেই ফল ঝরে যায়। কম বয়সী গাছে ফুল
এলেও তা থেকে ফল না নিয়ে সাত-আট বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত। উপযোগীজাত : কোন এলাকায় কোন জাতের নারিকেল ভালো হতে পারে তার উপযোগিতা যাচাই করেই নারিকেল গাছ রোপণ করা উচিত। মাটিরধরন : উর্বর মাটিবা কম চুনযুক্ত (১০-১৪ শতাংশ)মাটি নারিকেল চাষেবেশি উপযোগী।পোকার আক্রমণ :-
রোগ বা পোকার আক্রমণ হলে ওষুধ প্রয়োগ করে এর নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
নারকেলের ফুল বা ফল খাওয়া পোকায় আক্রমণ করলে ২ মিলি রগর এক লিটার পানিতে
মিশিয়ে ফুলের উপর ভালভাবে স্প্রে করতে হবে। গাছের কুঁড়ি বা পচা রোগের
জন্য ১ শতাংশ শক্তিযুক্ত বর্দো মিশ্রণ গাছের অগ্রভাগে বিশেষ করে পাতার
গোড়ায় ভাল করে প্রয়োগ করতে হবে।পরাগায়নেরপ্রভাবে :
নারিকেল ফুলে পরাগায়ন সংঘটিত হয় পোকা বিশেষ করে মৌমাছি অথবা বাতাসের
মাধ্যমে। এজন্য একই এলাকায় একাধিক নারিকেল গাছ থাকা দরকার,এতে পরাগায়নের
জন্য প্রয়োজনীয় ফুল থাকে।এ ছাড়া নারিকেল ফুল ফোটার পর বাতাস প্রবাহে
বাধার সৃষ্টি হলে পরাগায়নও বাধাগ্রস্ত হয়।এতে নারিকেল কুঁড়ি অবস্থাতেই
ঝরে পড়ে। অনেক সময় সুষম সার প্রয়োগ না করায় পুষ্টির অভাবে বা
অপূর্ণতায় ফুলসুষ্ঠু ভাবে পরিণত না হওয়ায় পরাগায়ন হওয়ার পরও ফল ঝরে
যায়। মৌমাছি যাতে নারিকেল গাছের এলাকায় ঘোরাফেরা করে সে জন্য প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা নিতে হয়। নারিকেলের ফুল ফোটার আগে অপ্রয়োজনে কোনো বালাইনাশক
স্প্রে করা ঠিক নয়। মাটির রসের কারণে :-নারিকেল গাছের
গোড়ায় যদি রস বেশি বা সব সময় স্যাঁতস্যাঁতে থাকে অথবা একেবারে শুকনো
থাকে তাহলে গাছের ভেতরের অবস্থা ও ক্রমবর্ধিষ্ণু ফলের কুঁড়ির মধ্যকার
আর্দ্রতার অসাম্যতা দেখা দেয়। এতে ফলের কুঁড়ির বোঁটা অতিরিক্ত নরম বা
শুকনো হয়ে যায় এবং ফল ঝরে পড়ে। আবহাওয়ায় আর্দ্রতার কম-বেশিও ফল ঝরার
কারণ হতে পারে। এ জন্য নারিকেল গাছের গোড়ার মাটিতে যেন সব সময় জো অবস্থা
থাকে সে দিকে লক্ষ রাখতে হয়। গ্রীষ্মে অতিরিক্ত গরমের সময় রাতে ও শীতে
অতিরিক্ত ঠাণ্ডার সময় দিনে নারিকেলের পাতায় শুধু পানি সেপ্র করে গাছের
স্বাভাবিক তাপমাত্রা ধরে রাখতে সাহায্য করলে ওই সময়ের অস্বাভাবিক অবস্থায়
ফল ঝরে পড়ে না বা ফল নষ্ট হয় না। সাধারণত মাটিতে সারের অভাব হলে কচি
অবস্থায় নারকেল বেশি করে ঝরে পড়ে। নারকেল গাছে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশ
সারের সঙ্গে সুহাগা প্রয়োগের বিশেষ প্রয়োজন। পটাশ সারের অভাব হলে
নারকেলের শাঁস গঠনে ব্যাঘাত হয় ও নারকেল ঝরে পড়ে। সেজন্য গোবর সার বা পচন
সারের সঙ্গে অনুমোদিত রাসায়নিক সার মিশিয়ে দুভাগ করে এক অংশ বর্ষার আগে
(চৈত্র-বৈশাখ) এবং অন্য অংশ বর্ষার পরে (অশ্বিন-কার্তিক) মাসে প্রয়োগ
করতে হবে।অতিরিক্ত ফল ধারণ : অনেক সময় গাছে
স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ফল ধরে এবং প্রতিটি ফল পরিমিত পরিমাণ পুষ্টির অভাবে
সঠিকভাবে বাড়তে না পারায় বেশির ভাগই ঝরে পড়ে। এ জন্য দু’টি ছড়ি বের
হওয়ার মধ্যে সময়ের পার্থক্য কম হলে ছড়িগুলো থেকে ফলসংখ্যা ছাঁটাই করে
ফেলা দরকার। এতে বাকিগুলো ঠিকভাবে বাড়তে পারে ও ফলঝরা কমে। ত্রুটিপূর্ণ ছাঁটাই:-
নারিকেল গাছের সবুজ পাতা ছাঁটাই করা কোনো ক্রমেই উচিত নয়। যেসব পাতা
শুকিয়ে যায় সেগুলোর গাছের সাথে লেগে থাকা মোটা বোঁটাটি না শুকানো পর্যন্ত
কাটা উচিত নয়। সবুজ পাতা কাটলে গাছেখাদ্য তৈরি কমে যায়। এতে ফল ঝরে
পড়তে পারে।জৈব বা অজৈব সার প্রয়োগ ও পরিমাণ :- খরার
সময় জমিতে পানির পরিমাণ কমে গেলে বা খরার পর ভারী বৃষ্টিপাত হলে গাছে
পানির পরিমাণ বেড়ে গেলে ছোট ছোট নারকেলগুলো ঝরে পড়ে। সেজন্য খরার সময়
নারকেল গাছের গোড়ায় ১৫-২০ দিন পর পানি দেয়ার প্রয়োজন। জমিতে পানির অভাব
হলে বা প্রতিকূল অবস্থায় ফল এবং ডাটার গোড়ায় এবসাইজিক অ্যাসিডের পরিমাণ
বেড়ে যায় এবং ফল ঝরে পড়ে। এমন অবস্থায় ৬০ পিপিএম শক্তির ২-৪-ডি মিশ্রণ
ফুলের ডাটায় ৭ দিন পর পর ৪ বার প্রয়োগ করলে ঝরে পড়া বন্ধ হয়।
প্লেনোফিক্স জাতীয় হরমোনের ১০ পিপিএম মিশ্রণ নারকেলের ফুলে এবং পরে ২০
পিপিএম নারকেলের ডাটায় প্রয়োগ করলেও নারকেল ঝরে পড়া বন্ধ হয়। সুস্থ্য এবং
রোগ, পোকার আক্রমণ না থাকা গাছের নারকেল হরমোনের জন্য সাধারণত ঝরে
পড়ে।
উত্তর সমূহ
গাছের বয়স : নারিকেল গাছের বয়স পাঁচ-ছয় বছর হলেই তাতে ফল ধরে। তবেছোট অবস্থাতেই ফল ঝরে যায়। কম বয়সী গাছে ফুল এলেও তা থেকে ফল না নিয়ে সাত-আট বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত। উপযোগী জাত : কোন এলাকায় কোন জাতের নারিকেল ভালো হতে পারে তার উপযোগিতা যাচাই করেই নারিকেল গাছ রোপণ করা উচিত। মাটির ধরন : উর্বর মাটিবা কম চুনযুক্ত (১০-১৪ শতাংশ)মাটি নারিকেল চাষেবেশি উপযোগী।পোকার আক্রমণ :- রোগ বা পোকার আক্রমণ হলে ওষুধ প্রয়োগ করে এর নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নারকেলের ফুল বা ফল খাওয়া পোকায় আক্রমণ করলে ২ মিলি রগর এক লিটার পানিতে মিশিয়ে ফুলের উপর ভালভাবে স্প্রে করতে হবে। গাছের কুঁড়ি বা পচা রোগের জন্য ১ শতাংশ শক্তিযুক্ত বর্দো মিশ্রণ গাছের অগ্রভাগে বিশেষ করে পাতার গোড়ায় ভাল করে প্রয়োগ করতে হবে।পরাগায়নের প্রভাবে : নারিকেল ফুলে পরাগায়ন সংঘটিত হয় পোকা বিশেষ করে মৌমাছি অথবা বাতাসের মাধ্যমে। এজন্য একই এলাকায় একাধিক নারিকেল গাছ থাকা দরকার,এতে পরাগায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ফুল থাকে।এ ছাড়া নারিকেল ফুল ফোটার পর বাতাস প্রবাহে বাধার সৃষ্টি হলে পরাগায়নও বাধাগ্রস্ত হয়।এতে নারিকেল কুঁড়ি অবস্থাতেই ঝরে পড়ে। অনেক সময় সুষম সার প্রয়োগ না করায় পুষ্টির অভাবে বা অপূর্ণতায় ফুলসুষ্ঠু ভাবে পরিণত না হওয়ায় পরাগায়ন হওয়ার পরও ফল ঝরে যায়। মৌমাছি যাতে নারিকেল গাছের এলাকায় ঘোরাফেরা করে সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হয়। নারিকেলের ফুল ফোটার আগে অপ্রয়োজনে কোনো বালাইনাশক স্প্রে করা ঠিক নয়। মাটির রসের কারণে :-নারিকেল গাছের গোড়ায় যদি রস বেশি বা সব সময় স্যাঁতস্যাঁতে থাকে অথবা একেবারে শুকনো থাকে তাহলে গাছের ভেতরের অবস্থা ও ক্রমবর্ধিষ্ণু ফলের কুঁড়ির মধ্যকার আর্দ্রতার অসাম্যতা দেখা দেয়। এতে ফলের কুঁড়ির বোঁটা অতিরিক্ত নরম বা শুকনো হয়ে যায় এবং ফল ঝরে পড়ে। আবহাওয়ায় আর্দ্রতার কম-বেশিও ফল ঝরার কারণ হতে পারে। এ জন্য নারিকেল গাছের গোড়ার মাটিতে যেন সব সময় জো অবস্থা থাকে সে দিকে লক্ষ রাখতে হয়। গ্রীষ্মে অতিরিক্ত গরমের সময় রাতে ও শীতে অতিরিক্ত ঠাণ্ডার সময় দিনে নারিকেলের পাতায় শুধু পানি সেপ্র করে গাছের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ধরে রাখতে সাহায্য করলে ওই সময়ের অস্বাভাবিক অবস্থায় ফল ঝরে পড়ে না বা ফল নষ্ট হয় না। সাধারণত মাটিতে সারের অভাব হলে কচি অবস্থায় নারকেল বেশি করে ঝরে পড়ে। নারকেল গাছে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশ সারের সঙ্গে সুহাগা প্রয়োগের বিশেষ প্রয়োজন। পটাশ সারের অভাব হলে নারকেলের শাঁস গঠনে ব্যাঘাত হয় ও নারকেল ঝরে পড়ে। সেজন্য গোবর সার বা পচন সারের সঙ্গে অনুমোদিত রাসায়নিক সার মিশিয়ে দুভাগ করে এক অংশ বর্ষার আগে (চৈত্র-বৈশাখ) এবং অন্য অংশ বর্ষার পরে (অশ্বিন-কার্তিক) মাসে প্রয়োগ করতে হবে।অতিরিক্ত ফল ধারণ : অনেক সময় গাছে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ফল ধরে এবং প্রতিটি ফল পরিমিত পরিমাণ পুষ্টির অভাবে সঠিকভাবে বাড়তে না পারায় বেশির ভাগই ঝরে পড়ে। এ জন্য দু’টি ছড়ি বের হওয়ার মধ্যে সময়ের পার্থক্য কম হলে ছড়িগুলো থেকে ফলসংখ্যা ছাঁটাই করে ফেলা দরকার। এতে বাকিগুলো ঠিকভাবে বাড়তে পারে ও ফলঝরা কমে। ত্রুটিপূর্ণ ছাঁটাই:- নারিকেল গাছের সবুজ পাতা ছাঁটাই করা কোনো ক্রমেই উচিত নয়। যেসব পাতা শুকিয়ে যায় সেগুলোর গাছের সাথে লেগে থাকা মোটা বোঁটাটি না শুকানো পর্যন্ত কাটা উচিত নয়। সবুজ পাতা কাটলে গাছেখাদ্য তৈরি কমে যায়। এতে ফল ঝরে পড়তে পারে।জৈব বা অজৈব সার প্রয়োগ ও পরিমাণ :- খরার সময় জমিতে পানির পরিমাণ কমে গেলে বা খরার পর ভারী বৃষ্টিপাত হলে গাছে পানির পরিমাণ বেড়ে গেলে ছোট ছোট নারকেলগুলো ঝরে পড়ে। সেজন্য খরার সময় নারকেল গাছের গোড়ায় ১৫-২০ দিন পর পানি দেয়ার প্রয়োজন। জমিতে পানির অভাব হলে বা প্রতিকূল অবস্থায় ফল এবং ডাটার গোড়ায় এবসাইজিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং ফল ঝরে পড়ে। এমন অবস্থায় ৬০ পিপিএম শক্তির ২-৪-ডি মিশ্রণ ফুলের ডাটায় ৭ দিন পর পর ৪ বার প্রয়োগ করলে ঝরে পড়া বন্ধ হয়। প্লেনোফিক্স জাতীয় হরমোনের ১০ পিপিএম মিশ্রণ নারকেলের ফুলে এবং পরে ২০ পিপিএম নারকেলের ডাটায় প্রয়োগ করলেও নারকেল ঝরে পড়া বন্ধ হয়। সুস্থ্য এবং রোগ, পোকার আক্রমণ না থাকা গাছের নারকেল হরমোনের জন্য সাধারণত ঝরে পড়ে।